জেনে রাখুন

জাতীয় পতাকা উড়ানোর নিয়ম ও তৈরির সঠিক মাপ

জাতীয় পতাকা উড়ানোর নিয়ম ও তৈরির সঠিক মাপ নিয়ে এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেকোনো দেশের স্বাধীন সার্বভৌমত্বের প্রতীক হচ্ছে সেদেশের পতাকা। আর এ পতাকা একটি দেশ তথা রাষ্ট্রের পরিচয় বহন করে। বাংলাদেশের পতাকায় সবুজের বুকে লাল বৃত্ত। ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এক ছাত্রসভায় তৎকালীন ছাত্রনেতা ডাকসু ভিপি আ.স. ম. আবদুর রব প্রথম জাতীয় পতাকা (মানচিত্র খচিত) উত্তোলন করেন।

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

  • পতাকার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত ১০ : ৬ এবং দৈর্ঘ্য ও বৃত্তের ব্যাসার্ধের অনুপাত ৫ : ১।
  • ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এক ছাত্রসভায় তৎকালীন ছাত্রনেতা ডাকসু ভিপি আ.স. ম. আবদুর রব প্রথম জাতীয় পতাকা (মানচিত্র খচিত) উত্তোলন করেন।
  • জাতীয় পতাকা দিবস পালিত হয়- ২রা মার্চ।
  • মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত পতাকায় লাল বৃত্তের মাঝে হলুদ মানচিত্র ছিল ।
  • মানচিত্র খচিত পতাকার ডিজাইনার শিব নারায়ণ দাশ। তবে ১২ জানুয়ারি, ১৯৭২ তারিখে এই পতাকা থেকে মানচিত্রটি সরিয়ে ফেলা হয়। কামরুল হাসান দ্বারা পরিমার্জিত রূপটিই বর্তমান বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা যা ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি সরকারিভাবে গৃহীত হয়।

জাতীয় পতাকা উড়ানোর নিয়ম

  • ১. বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার গাঢ় সবুজ বর্ণের আয়তক্ষেত্রের মাঝখানে একটা ভরাট রক্তিম বৃত্ত নিয়ে এটা তৈরি। এর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত ১০:৬। পতাকার মাঝখানের লাল বৃত্তটির ব্যাসার্ধ হবে পতাকার দৈর্ঘ্যরে ৫ ভাগের একভাগ।
  • ২. পতাকা টানানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যাতে এটি এমন জায়গায় টানানো না হয় যাতে এর মান অক্ষুণ্ণ হয়।
  • ৩. পতাকা দিয়ে মোটরযান, রেলগাড়ি অথবা নৌযানের খোল, সম্মুখভাগ অথবা পেছনের অংশ কোনো অবস্থাতেই ঢেকে দেয়া যাবে না
  • ৪. যেসব ক্ষেত্রে কেবলমাত্র দুটি পতাকা অথবা রঙিন পতাকা উত্তোলন করা হয়, সেক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের পতাকা’ ভবনের ডানদিকে উত্তোলন করা হবে।
  • ৫. বাংলাদেশের পতাকা’র উপরে অন্য কোনো পতাকা বা রঙিন পতাকা উত্তোলন করা যাবে না।

  • ৬. যে ক্ষেত্রে অন্য কোনো দেশের সহিত ‘বাংলাদেশের পতাকা’ একত্রে উত্তোলন করা হয়, সেক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের পতাকা’ প্রথমে উত্তোলন করতে হবে এবং নামানোর সময় সবশেষে নামাতে হবে।
  • ৭. যে ক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের পতাকা’ অর্ধনমিত থাকে, সেক্ষেত্রে প্রথমে সর্বোচ্চ চূড়া পর্যন্ত উত্তোলন করা হবে এবং অতঃপর নামিয়ে অর্ধনমিত অবস্থায় আনা হবে। ওই দিবসে পতাকা নামানোর সময় পুনরায় উপরিভাগ পর্যন্ত উত্তোলন করা হবে, অতঃপর নামাতে হবে।
  • ৮. ‘পতাকা’ কোনো ব্যক্তি বা জড় বস্তুর দিকে নিম্নমুখী করা যাবে না।
  • ৯. তাকা’ কখনই তার নিচের কোনো বস্তু যেমন- পানি বা কোনো পণ্যদ্রব্য স্পর্শ করবে না।
  • ১০. ‘পতাকা’ কখনই আনুভূমিকভাবে বা সমতলে বহন করা যাবে না, সর্বদাই ঊর্ধ্বে এবং মুক্তভাবে থাকবে।

  • ১১. পতাকাকে কখনও পদদলিত করা যাবে না।
  • ১২. কোনো কিছু গ্রহণ, ধারণ, বহন বা বিলি করার জন্য ‘পতাকা’ ব্যবহার করা যাবে না।
  • ১৩. ‘পতাকা’ দ্রুত উত্তোলন করতে হবে এবং সসম্মানের সঙ্গে নামাতে হবে।
  • ১৪. পতাকার অবস্থা যদি এমন হয় যে, তা আর ব্যবহার করা যাবে না, নষ্ট হয়ে গেছে, সেক্ষেত্রে তা মর্যাদাপূর্ণভাবে, বিশেষ করে সমাধিস্থ করে নিষ্পত্তি করতে হবে।

জাতীয় পতাকার সঠিক মাপ, তৈরির নিয়ম, ব্যবহার ও বিধান

জাতীয় পতাকার মাপ, তৈরির নিয়ম, ব্যবহার ও বিধান কী :

  • বাংলাদেশের পতাকার দৈর্ঘ্য ১০ ফুট হলে প্রস্থ হবে ৬ ফুট, লাল বৃত্তের ব্যাসার্ধ হবে ২ ফুট, পতাকার দৈর্ঘ্যের সাড়ে ৪ ফুট ওপরে প্রস্থের মাঝে হবে লাল বৃত্তের কেন্দ্রবিন্দু।
  • জাতীয় পতাকা সঠিক রং ও মাপে তৈরি করতে হবে
  • গাড়িতে জাতীয় পতাকা লাগাতে চাইলে অব্যশই সামনে রাখতে হবে, পেছনে নয় 
  • জাতীয় পতাকা মাটি, পানি বা মেঝেতে ফেলা যাবে না
  • জাতীয় পতাকার ওপর কিছু লেখা বা মুদ্র্রন করা যাবে না।এমন কি কোনো অনুষ্ঠান উপলক্ষে কিছু আঁকা যাবে না।
  • নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট স্থানেই কেবল জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা যাবে। সূর্য উদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পতাকা ওড়ানো যায়
  • শোক দিবসে পতাকা অর্ধ নিমিত করতে থাকবে। পতাকা অর্ধনিমিত রাখার ক্ষেত্রে প্রথমে পতাকা শীর্ষ স্থান পর্যন্ত ওঠাতে হবে। তারপর অর্ধনিমিত অবস্থানে রাখতে হবে। দিনের শেষে পতাকা নামানোর সময় পুনরায় শীর্ষ স্থান পর্যন্ত ওঠিয়ে তারপর নামাতে হবে
  • যখনই জাতীয় পতাকা প্রদর্শিত হবে, অবশ্যই দাড়িয়ে সম্মান জানাতে হবে
  • পতাকার অবমাননা হলে সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।  

সর্বশেষ সংবাদ

Rate this post

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!